পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি মাসে ১৫,০০০-৭০,০০০ টাকা আয়

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি মাসে ১৫,০০০-৭০,০০০ টাকা আয়

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি মাসে ১৫,০০০-৭০,০০০ টাকা আয়

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি: কম বিনিয়োগে সরকারি পার্টনার হয়ে মাসে ১৫,০০০-৭০,০০০ টাকা আয়ের  | business idea for  2025 গুরুকুল একাডেমি

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি মাসে ১৫,০০০-৭০,০০০ টাকা আয় business idea for  2025

আপনি কি চাকরির পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়ের উপায় খুঁজছেন? নাকি বেকার থাকার কারণে এমন একটি ব্যবসার কথা ভাবছেন, যা কম বিনিয়োগে শুরু করা যায় এবং স্থিতিশীল আয়ের নিশ্চয়তা দেয়? তাহলে ইন্ডিয়া পোস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজি (Post Office Franchise)আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ হতে পারে! এই ব্যবসায় মাত্র ৫,০০০-১০,০০০ টাকার সিকিউরিটি ডিপোজিট দিয়ে আপনি নিজের বাড়িতে বা ছোট দোকানে পোস্ট অফিসের শাখা খুলে মাসে ১৫,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা বা তার বেশি আয় করতে পারেন।

আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আপনাকে সহজ ও সরল ভাষায় বুঝিয়ে দেব—কীভাবে এই ব্যবসা শুরু করবেন, কত টাকা লাগবে, কী কী যোগ্যতা দরকার, কীভাবে আয় করবেন এবং কীভাবে সফল হবেন। তাই শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটা পড়ার অনুরোধ রইল। 

ইন্ডিয়া পোস্ট: কেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি এত জনপ্রিয়?

ইন্ডিয়া পোস্ট শুধু চিঠি পাঠানোর জায়গা নয়। এটি এখন গ্রাম থেকে শহর—সব জায়গায় মানুষের ভরসার নাম। চিঠি-পত্র ছাড়াও ইন্ডিয়া পোস্ট এখন সঞ্চয় প্রকল্প, লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আধার সার্ভিস, ই-কমার্স ডেলিভারি, বিল পেমেন্ট এবং সরকারি কাগজপত্র পাঠানোর মতো অনেক পরিষেবা দেয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাক নেটওয়ার্ক হিসেবে ইন্ডিয়া পোস্টের ১.৫৬ লক্ষ শাখার ৮৯% গ্রামাঞ্চলে রয়েছে। তবুও অনেক এলাকায় এখনও পোস্ট অফিসের পরিষেবা পৌঁছায়নি। এই ফাঁক পূরণ করতেই ইন্ডিয়া পোস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির সুযোগ দিচ্ছে।

এই ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে আপনি একটি সরকারি সংস্থার পার্টনার হবেন, যার ফলে আপনার ব্যবসায় গ্রাহকের ভরসা ও স্থিতিশীলতা দুটোই থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা, আপনাকে গ্রাহক খুঁজতে হবে না—ইন্ডিয়া পোস্টের নামই গ্রাহক টানবে!

এই ব্যবসা কাদের জন্য উপযুক্ত?

এই ব্যবসা প্রায় সবার জন্যই উপযুক্ত। আপনি যদি নিচের যেকোনো একটি গ্রুপের মধ্যে পড়েন, তাহলে এটি আপনার জন্য:

  • শিক্ষিত বেকার: যারা চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু এখনই আয় শুরু করতে চান।
  • গৃহবধূ: বাড়িতে বসে ব্যবসা করে পরিবারের জন্য অতিরিক্ত আয় করতে চান।
  • অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি: অবসরের পর সক্রিয় থাকতে এবং আয়ের উৎস তৈরি করতে চান।
  • ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা: যারা কম ঝুঁকিতে নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান।

এই ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—আপনাকে আলাদা করে গ্রাহক খুঁজতে হবে না। ইন্ডিয়া পোস্টের বিশ্বস্ত নামের কারণে গ্রাহক নিজে থেকেই আসবেন।

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজির দুই ধরনের মডেল

1:-ফ্র্যাঞ্চাইজি আউটলেট
  • প্রধান কাজ: স্পিড পোস্ট, রেজিস্ট্রি, পার্সেল বুকিং, স্ট্যাম্প বিক্রি, পেমেন্ট সংগ্রহ, সঞ্চয় প্রকল্প ও লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রচার।
  • উপযুক্ত এলাকা: যেখানে পোস্ট অফিস নেই বা অনেক দূরে।
  • কমিশন: স্পিড পোস্টে ৭-২৫%, রেজিস্ট্রিতে ৩ টাকা/পিস, স্ট্যাম্প বিক্রিতে ৫%।
2:-পোস্টাল এজেন্ট
  • প্রধান কাজ: শুধু স্ট্যাম্প ও স্টেশনারি বিক্রি।
  • উপযুক্ত এলাকা: ব্যস্ত বাজার, স্কুল-কলেজের কাছে।
  • কমিশন: বিক্রয়মূল্যের ৫%।

ইন্ডিয়া পোস্ট দুই ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজি অফার করে। আপনি আপনার সুবিধা ও এলাকার চাহিদা অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন:

কেন আউটলেট বেছে নেবেন? আউটলেট মডেলে আপনি বেশি পরিষেবা দিতে পারবেন, যার ফলে আয়ও বেশি হবে। এছাড়া, ই-কমার্স ও সরকারি স্কিমের কারণে গ্রাহকের ভিড় বেশি থাকবে।

কী কী যোগ্যতা লাগবে?

ইন্ডিয়া পোস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে খুব বেশি যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। নিচের শর্তগুলো পূরণ করলেই আপনি আবেদন করতে পারবেন:

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস (কিছু এলাকায় দশম শ্রেণি পছন্দ করা হয়)।
  • বয়স: ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। উপরের বয়সসীমা নেই।
  • পরিবারের সদস্য: আপনার পরিবারের কেউ যদি একই ডিভিশনে পোস্ট অফিসে চাকরি করেন, তাহলে আপনি বা আপনার নিকট আত্মীয় আবেদন করতে পারবেন না।
  • এলাকার চাহিদা: আপনার এলাকায় পোস্ট অফিসের পরিষেবার অভাব থাকতে হবে।

কত টাকা বিনিয়োগ লাগবে?

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করতে খুব বেশি টাকার দরকার নেই। এটি কম বিনিয়োগের একটি ব্যবসা। নিচে খরচের বিবরণ দেওয়া হলো:

খরচের ধরন পরিমাণ (টাকা) বিস্তারিত
সিকিউরিটি ডিপোজিট ৫,০০০-১০,০০০ ফেরতযোগ্য। এলাকার চাহিদা অনুযায়ী বাড়তে পারে।
কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার ২৫,০০০-৩৫,০০০ নিজের থেকে কিনতে হবে।
দোকানের সাজসজ্জা ও সাইনবোর্ড ১৫,০০০-২০,০০০ ইন্ডিয়া পোস্টের নিয়ম অনুযায়ী।
অন্যান্য (ইউপিএস, স্ট্যাম্প স্টক) ১০,০০০-১৫,০০০ স্টক নিয়মিত রিফিল করতে হবে।
মোট ৫৫,০০০-৮০,০০০ ভাড়ার দোকান হলে অতিরিক্ত ভাড়া লাগবে।

এই টাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, সিকিউরিটি ডিপোজিট ফেরতযোগ্য। তাই আপনার ঝুঁকি খুবই কম।

কী কী পরিষেবা দেবেন?

একজন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক হিসেবে আপনি নিচের পরিষেবাগুলো দিতে পারবেন:

  • স্পিড পোস্ট, রেজিস্ট্রি, পার্সেল বুকিং।
  • স্ট্যাম্প ও স্টেশনারি বিক্রি।
  • পোস্টাল সেভিং স্কিমের প্রচার ও রেজিস্ট্রেশন।
  • লাইফ ইন্স্যুরেন্স রেজিস্ট্রেশন।
  • সরকারি কাগজপত্র পাঠানো।
  • আধার আপডেট (যদি অনুমোদন পান)।

এই পরিষেবাগুলোর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।

20 business idea for women (2025)

কীভাবে আয় করবেন?

আপনার আয় হবে কমিশনের মাধ্যমে। প্রতিটি পরিষেবার জন্য আলাদা কমিশন রয়েছে। নিচে একটি তালিকা দেওয়া হলো:

পরিষেবা কমিশন অতিরিক্ত ইনসেনটিভ
স্পিড পোস্ট ৭-২৫% (মাসিক টার্নওভারের ওপর নির্ভর করে) ১,০০০+ পিস হলে ২০% বোনাস
রেজিস্ট্রি ৩ টাকা/পিস ১,০০০+ পিস হলে ২০% বোনাস
মানি অর্ডার ৫ টাকা/অর্ডার -
স্ট্যাম্প বিক্রি বিক্রয়মূল্যের ৫% রাজস্ব স্ট্যাম্পে ৪০%
পোস্টাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ামের ৪-৬% রিনিউয়ালে ১% অতিরিক্ত
সেভিংস অ্যাকাউন্ট ২০-৫০ টাকা/অ্যাকাউন্ট লক্ষ্য ছাড়ালে বোনাস

একটি উদাহরণ:

ধরুন, আপনার দৈনিক গড় কাজ:

  • ৩০টি স্পিড পোস্ট (গড় ফি ৩৫ টাকা) = ৭৩.৫ টাকা কমিশন
  • ৫০টি রেজিস্ট্রি = ১৫০ টাকা
  • ২০টি মানি অর্ডার = ১০০ টাকা
  • ৬,০০০ টাকার স্ট্যাম্প বিক্রি = ৩০০ টাকা
  • ৫০,০০০ টাকার PLI প্রিমিয়াম = ২,৫০০ টাকা
  • অন্যান্য = ৩,০০০ টাকা

মোট মাসিক আয়: প্রায় ২৪,২০৫ টাকা।
যদি আপনি ভালো লোকেশনে থাকেন এবং বেশি গ্রাহক টানতে পারেন, তাহলে এই আয় ৭০,০০০ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে।

কীভাবে আবেদন করবেন?

ইন্ডিয়া পোস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য আবেদন করা খুবই সহজ। নিচে ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া দেওয়া হলো:

  1. ওয়েবসাইটে যান: www.indiapost.gov.in-এ গিয়ে “Franchise Scheme” সেকশন খুঁজুন।
  2. ফর্ম ডাউনলোড করুন: ‘Application-cum-Agreement’ ফর্ম (Annex-I) ডাউনলোড করুন।
  3. ফর্ম পূরণ করুন: প্রিন্ট করে সঠিক তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করুন।
  4. ডকুমেন্ট জমা দিন: ফর্মের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও NSC সিকিউরিটি সার্টিফিকেট জমা দিন নিকটস্থ ডিভিশনাল পোস্ট অফিসে।
  5. সমীক্ষা ও অনুমোদন: পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা ৭ দিনের মধ্যে আপনার এলাকা সমীক্ষা করবেন। ১৪ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
  6. শুরু করুন: অনুমোদন পেলে MoA-তে সই করুন, সিকিউরিটি ডিপোজিট দিন, প্রশিক্ষণ নিন এবং ব্যবসা শুরু করুন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:

  • অষ্টম/দশম শ্রেণির সার্টিফিকেট।
  • ভোটার আইডি/পাসপোর্ট/আধার কার্ড।
  • প্যান কার্ড।
  • ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ বিল, রেশন কার্ড)।
  • NSC-এর মূল চালান।
  • দুজন স্থানীয় রেফারেন্সের চিঠি।

সাফল্যের জন্য গুরুকুল একাডেমির ৫টি টিপস

  1. সঠিক জায়গা বেছে নিন: বাসস্ট্যান্ড, কলেজ, বাজার বা হাউজিং কমপ্লেক্সের কাছে জায়গা বেছে নিন, যেখানে পোস্ট অফিস ৩-৫ কিমি দূরে।
  2. অনলাইন সুবিধা ব্যবহার করুন: ইন্ডিয়া পোস্টের Click-N-Book সার্ভিসের মাধ্যমে ফ্রি পিক-আপ অফার করুন। এতে স্পিড পোস্টের পরিমাণ ২০% বাড়বে।
  3. ই-কমার্সের সঙ্গে চুক্তি করুন: স্থানীয় ই-কমার্স ব্র্যান্ড বা কুরিয়ার সংস্থার সঙ্গে রিটার্ন হ্যান্ডলিংয়ের চুক্তি করলে অতিরিক্ত কমিশন পাবেন।
  4. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: ফেসবুক ও WhatsApp-এ নিয়মিত প্রচার করুন। ফ্রি পিক-আপ অফার দিন। ২-৩ মাসে ৪,০০০-৬,০০০ ফলোয়ার তৈরি করা সম্ভব।
  5. একাধিক পরিষেবা দিন: একই গ্রাহককে স্পিড পোস্ট, লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও আধার সার্ভিস দিলে কমিশন তিনগুণ বাড়বে।

ঝুঁকি ও সমাধান

ঝুঁকি সমাধান
নগদ চুরি বা হিসেবের ভুল CCTV বসান, ডবল সেফ ব্যবহার করুন এবং দৈনিক হিসেব মিলিয়ে নিন।
ভুয়া এজেন্টের প্রতারণা শুধু অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আবেদন করুন। কোনো মধ্যস্থতাকারীকে টাকা দেবেন না।
কম গ্রাহক ভালো লোকেশন বেছে নিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন।
অনলাইন সিস্টেম ডাউন ম্যানুয়াল রসিদ রাখুন এবং গ্রাহকদের সুশৃঙ্খলভাবে সামলান।

কেন ২০২৫-এ এই ব্যবসা করবেন?

২০২৫-এ পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজির চাহিদা বাড়ছে কারণ:

  • ই-কমার্স বৃদ্ধি: ই-কমার্স অর্ডার ও রিটার্ন ২৩% হারে বাড়ছে।
  • সরকারি উদ্যোগ: ১০০+ জেলায় Dak Ghar Niryat Kendra খোলা হয়েছে, যা রপ্তানিকারকদের পোস্ট অফিসের দিকে টানছে।
  • ডোর-স্টেপ সার্ভিস: Click-N-Book-এর ফ্রি পিক-আপ সার্ভিস গ্রাহক বাড়াচ্ছে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

১. পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে?

পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করতে মোট ৫৫,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা লাগতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • সিকিউরিটি ডিপোজিট: ৫,০০০-১০,০০০ টাকা (ফেরতযোগ্য)
  • ইকুইপমেন্ট: কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানারের জন্য ২৫,০০০-৩৫,০০০ টাকা
  • দোকান সাজসজ্জা ও সাইনবোর্ড: ১৫,০০০-২০,০০০ টাকা
  • অন্যান্য খরচ: ইউপিএস, স্ট্যাম্প স্টকের জন্য ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা

যদি আপনার দোকান ভাড়া নিতে হয়, তাহলে ভাড়ার খরচ আলাদা লাগবে। সিকিউরিটি ডিপোজিট ফেরতযোগ্য হওয়ায় এই ব্যবসার ঝুঁকি খুবই কম।

২. পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে কী কী যোগ্যতা লাগবে?

  • ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস (কিছু এলাকায় দশম শ্রেণি পছন্দ করা হয়)
  • বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে, উপরের বয়সসীমা নেই
  • আপনার পরিবারের কেউ একই ডিভিশনে পোস্ট অফিসে চাকরি করলে আবেদন করা যাবে না
  • আপনার এলাকায় পোস্ট অফিসের পরিষেবার অভাব থাকতে হবে
  • ২০০ স্কয়ার ফিটের একটি ঘর (নিজের বা ভাড়ার) এবং কম্পিউটার, ইন্টারনেট, প্রিন্টার ও বিদ্যুৎ ব্যাকআপ থাকতে হবে

৩. এই ব্যবসায় কত টাকা আয় করা সম্ভব?

আপনার আয় সম্পূর্ণ কমিশনভিত্তিক এবং লোকেশন ও গ্রাহকের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে। গড়ে মাসে ১৫,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা বা তার বেশি আয় সম্ভব। উদাহরণ:

  • স্পিড পোস্ট: দৈনিক ৩০টি বুকিং = মাসে ২,২০৫ টাকা
  • রেজিস্ট্রি: দৈনিক ৫০টি = মাসে ৪,৫০০ টাকা
  • মানি অর্ডার: দৈনিক ২০টি = মাসে ৩,০০০ টাকা
  • স্ট্যাম্প বিক্রি: মাসে ৬,০০০ টাকার = ৯,০০০ টাকা
  • লাইফ ইন্স্যুরেন্স: ৫০,০০০ টাকার প্রিমিয়াম = ২,৫০০ টাকা
  • অন্যান্য পরিষেবা থেকে = ৩,০০০ টাকা

মোট: প্রায় ২৪,২০৫ টাকা। ভালো লোকেশন ও মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে এই আয় ৭০,০০০ টাকার বেশিও হতে পারে।

৪. পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য কীভাবে আবেদন করব?

  1. www.indiapost.gov.in ওয়েবসাইটে যান এবং “Franchise Scheme” সেকশন খুঁজুন
  2. ‘Application-cum-Agreement’ ফর্ম ডাউনলোড করুন
  3. ফর্মটি প্রিন্ট করে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন
  4. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহ নিকটস্থ ডিভিশনাল পোস্ট অফিসে জমা দিন
  5. পোস্ট অফিস ৭ দিনের মধ্যে আপনার এলাকা সমীক্ষা করবে এবং ১৪ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবে
  6. অনুমোদন পেলে MoA-তে সই করুন, সিকিউরিটি ডিপোজিট জমা দিন এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করুন

সতর্কতা: শুধু অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করুন। কোনো এজেন্ট বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা দেবেন না।

৫. ফ্র্যাঞ্চাইজিতে কি ডেলিভারির কাজ করতে হবে?

না, ফ্র্যাঞ্চাইজি আউটলেটে আপনাকে শুধু কাউন্টার সার্ভিস দিতে হবে, যেমন—বুকিং, স্ট্যাম্প বিক্রি, সেভিং স্কিম প্রচার। ডেলিভারির কাজ পোস্ট অফিসের কর্মীরা করবেন।

৬. এই ব্যবসায় কি কোনো ঝুঁকি আছে?

  • নগদ চুরি বা হিসেবের ভুল: CCTV, ডবল সেফ ব্যবহার করুন
  • ভুয়া এজেন্টের প্রতারণা: কেবল অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আবেদন করুন
  • কম গ্রাহক: ভালো লোকেশন বেছে নিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন
  • অনলাইন সিস্টেম ডাউন: ম্যানুয়াল রসিদ রাখুন

৭. কম্পিউটার কেন বাধ্যতামূলক?

ইন্ডিয়া পোস্টের সব কাজ এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে হয়। স্পিড পোস্ট বুকিং, ট্র্যাকিং, পেমেন্ট রেকর্ড ও POS সফটওয়্যার চালানোর জন্য কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ইন্টারনেট বাধ্যতামূলক।

৮. ফ্র্যাঞ্চাইজি চালাতে কি ফিক্সড বেতন আছে?

না, আপনার আয় সম্পূর্ণ কমিশনভিত্তিক। তবে ইন্ডিয়া পোস্টের বিশ্বস্ত নামের কারণে গ্রাহক সহজেই পাওয়া যায়।

৯. এই ব্যবসায় সাফল্যের জন্য কী কী করতে হবে?

  • ভালো লোকেশন বেছে নিন
  • Click-N-Book-এর সুবিধা ব্যবহার করুন
  • ই-কমার্স কোম্পানির সঙ্গে কাজ করুন
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করুন
  • একাধিক পরিষেবা দিন

১০. এই ফ্র্যাঞ্চাইজি কি সত্যিই লাভজনক?

হ্যাঁ, ইন্ডিয়া পোস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজি খুবই লাভজনক, বিশেষ করে ২০২৫-এ। কারণ:

  • ই-কমার্স অর্ডার ও রিটার্ন বাড়ছে
  • সরকারের Dak Ghar Niryat Kendra উদ্যোগ চালু হয়েছে
  • Click-N-Book-এর ফ্রি পিক-আপ সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে
  • কম বিনিয়োগ, সরকারি ব্র্যান্ড এবং বাড়তি চাহিদা


ডিসক্লেইমার:

এই আর্টিকেলটি গুরুকুল একাডেমি কর্তৃক শুধুমাত্র তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এখানে দেওয়া তথ্য ইন্ডিয়া পোস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং সাধারণভাবে উপলব্ধ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে লেখা। ফ্র্যাঞ্চাইজি সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দয়া করে www.indiapost.gov.in-এ সর্বশেষ নীতি ও নির্দেশিকা যাচাই করুন। বিনিয়োগ বা ব্যবসার ক্ষেত্রে আর্থিক ঝুঁকি থাকতে পারে, তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। গুরুকুল একাডেমি এই তথ্যের সঠিকতা বা সম্পূর্ণতার জন্য কোনো গ্যারান্টি প্রদান করে না এবং কোনো আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়ী থাকবে না।

গুরুকুল একাডেমির সঙ্গে থাকুন, সঠিক তথ্য নিন, সফল হন!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Ads Area